Tritiyo Limited

height="90"

Breaking News

মোটিভেশনাল কথা বিক্রেতা




Samrat Khan: আমার বন্ধু, আমার অফিসের মার্কেটিং হেডের সাথে আজ একটা বিষয়ে কথা বলছিলাম, আর বিষয়টা হচ্ছে "মোটিভেশনাল কথা বিক্রেতা"। হ্যা, তাহারা বিক্রেতা। অনেকটা শরীর বিক্রেতার মত।
বিষয়টা আলোচনা করতে করতে একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম সেইসাথে মনে করলাম আমার বাবা কিভাবে আমাকে এই বিক্রেতা জগত থেকে বের করে এনেছিল। হ্যাঁ, আমার বাবা আমাকে বলেছিল টাকা ইনকাম করো কিন্তু সেটার সাথে যেন বদ দুয়া না কামাও। কঠিন লাগছে? সহজ করছি। সহজ করতে হলে একটু নিজের ঢোল নিজে পেটাতে হবে।
২০০৭ - ২০০৯। আমি তখন সিএস পরছি। ৩য় বর্ষে সম্ভবত। অত মনে করতে পারছি না। ডাটা এন্ট্রিরর কাজ করতাম নিজের খরচ চালানোর জন্য। #বেসিস ভবনের(বিএসইসি ভবন - প্রোবাবলি) দোতলায়। সুপ্রিম ডাটা সল্যুশনসস। সাথে ইত্তেফাক পত্রিকায় ফিচার লেখি। সারাদিন আজিমপুর টু সিটি কলেজ টু নীলক্ষেত টু কাওরান বাজার টু ইত্তেফাক। এইভাবেই চলছিল। ঐসময় ফ্রিলান্সিংয়ের সাথে আমার পরিচয়। ২০০৮ এর নভেম্বর অথবা ডিসেম্বর মনে নেই। জীবনের প্রথম অনলাইন ইনকাম হাতে পাই। টাকাটা অল্পই ছিল। খরচাদি বাদ দিয়া হাতে এসেছিল ৫৭০০। অসম্ভব ভালো লাগছিল। সেটা বিভিন্ন জায়গায় বলা শুরু করলাম। কাজ করতে থাকলাম। ২০০৯ এর শেষের দিকে হঠাৎ করেই এক বড় ভাই (প্রসঙ্গত তার নামটা আমি উল্লেখ করছিনা) আমাকে একদিন ডেফোডিল ইউনিভার্সিটি, সোবহানবাগ শাখায় আমাকে যেতে বলেন আমার ইনকাম স্টোরি শোনাতে। আমিও চলে গেলাম। ৩০-৪০ মিনিট স্পিচ দিয়া আমি ৫০০০ টাকা পাইলাম। এরপর টানা ৫ মাসের মত বিভিন্ন জায়গায় আমার ডাক পরতে থাকলো নিয়মিত, এটিএন বাংলার আইটি জোন থেকে আমাকে ডাকা হলো, গেলাম। আমি অল্প দিনেই মোটামুটি মানের সেলেব্রিটি বনে গেলাম। প্রচুর লোকজন আসা শুরু করলো। প্রচুর ফোন আসতো প্রতিদিন। ২০-৩০ টা ফোন মিনিমাম। আমার ফ্রেন্ডলিস্টে অনেকেই এখনো আছে। কারো নাম উল্লেখ করছিনা। আশা করি আমার লেখা পরলে তারা কমেন্ট করবেন।
যাইহোক আমিতো তখন পুরা দমে বিভিন্ন জায়গায় স্পিচ দেই। টাকা আসছে প্রতি সপ্তায়। দু তিনটা স্পিচতো দেই এক সপ্তাহে। গড় পড়তা ১০ হাজার দেয় প্রতিটা। টাকা ইনকাম করতে কার না ভালো লাগে। আমারও লাগতো। কিন্তু আসল লাগামটা ধরলেন আমার বাবা।
আসলে আমি মাঝে মাঝে বিরক্ত হতাম বা ঘুমাইতাম তখন আমার বাবাই আমার ফোন প্রায় রিসিভ করতো। যথারীতি একদিন ফোন রিসিভ করলেন। অপর প্রান্ত থেকে #শফিকুল নামের একজন বললেন, আংকেল আমি নাখালপাড়া রেইলগেট আসছি ইতোমধ্যে। আপনাদের বাসাটা কই? আমি সম্রাট ভাইয়ের সাথে দেখা করতে আসছি। আমি ঘুমিয়েছিলাম। বাবাই গিয়ে ওনাকে নিয়ে আসছেন। বাসায় আসার পর প্রায় ১:৩০ মিনিট সময় ভদ্রলোক বাবার সাথে কথা বলেছেন। মাস তিনেক হলো তিনি ট্রাই করে যাচ্ছেন কিন্তু কোন একটা রেসপন্স উনার আসে নাই। এদিকে উনি ১৬ হাজার টাকা বেতনের মুসলিম সুইটসের ম্যানেজারের চাকরিটাও ছেড়ে দিয়েছেন। এখন এক ছোট মেয়ে, মা ও বউকে নিয়ে ঢাকায় থাকাটাই দূরহ হয়ে গেছে। বলে নেই এই #শফিকুল ভাই হচ্ছেন আমার একদম ফার্স্ট সেমিনারের ক্লায়েন্ট। আমার না আসলে যারা আয়োজন করেছিলেন। আমার এখন মনেও নেই কারা আয়োজন করেছিলো। শুধু ঐ ভাইয়ের নাম মনে আছে।
যাইহোক, শফিকের ঘটনার পর থেকে আমার বাবা আমাকে মোটিভেশনাল বিক্রেতা হওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন। আমি আর পরবর্তিতে আর এই ধরনের কোন সেমিনারের টাকার বিনিময়ে নিজেকে বিক্রি করি নাই।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
#মোটিভেশন নিয়া কচু হবো। যার ক্ষেত তার নিড়াইতে হবো। নিজে নিজে মোটিভেশন নেন। নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্ট করেন। সাকসেস আসবে আপনার টেবিলে, আপনার পকেটে।
এখানে অল্প কিছু লিখলাম। আরো কথা আছে ধীরে ধীরে আরো বেশ কিছু লিখবো।
#সফলতা ও #প্রতিষ্টিত'র মাঝে তফাৎ কি সেটা জানতে হবে
#ফ্রিল্যান্সিং, আমাদের "কথা বিক্রেতা" ব্যক্তিদের ভুল নির্দেশনা জানতে হবে

কোন মন্তব্য নেই